অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও ট্যাবলেটের জন্য গেমের শেষ নেই। যেসব গেম আমরা এক সময় পিসি/কনসোলে খেলেছি সেগুলোও ধীরে ধীরে অ্যান্ড্রয়েডে আসতে শুরু করেছে। এর মাঝে নতুন করে কোনও ডেভেলপারের পক্ষে বাজার মাত করা গেম নিয়ে আসাটা আসলেই অনেক কঠিন কাজ। কারণ নতুনত্ব বলতে আর কিছু বাকি আছে কিনাসেটাই এখন ভাববার বিষয়। কিন্তু এর মাঝেও যে এখনও সম্ভব নতুন কিছু আনা সেটিই পিকপক প্রমান করেছে ইন্টু দা ডেড এর মাধ্যমে। কি আছে এই গেমে যা আগের কোনও গেমে নেই? চলুন দেখা যাক।
গেমটির কাহিনী খুবই সংক্ষিপ্ত। আপনার হেলিকপ্টার একটি বিজন এলাকায় আছড়ে পরে, আপনি ছাড়া আর সবাই মারা যায়। আপনি ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে এসে আবিস্কার করেন এই এলাকায় প্রায় সবাই জোম্বি এবং তাদের লক্ষ্য একটিই, আপনাকে ভক্ষণ করা! অন্য কথায়, আপনি হেলিকপ্টার ক্র্যাশের পর নিজেকে আবিষ্কার করবেন এক জোম্বি অ্যাপোক্যালিপ্স-এ।
আপনার মুল লক্ষ্য হচ্ছে আপনাকে দৌড়ে পালাতে হবে জোম্বিদের কাছ থেকে। অনেকটা টেম্পল রানের দানব বা সাবওয়ে সার্ফারের পুলিশের মত। তবে ব্যতিক্রম হচ্ছে, টেম্পল রান বা সাবওয়ে সার্ফারে যেমন পেছন থেকে শত্রু আসে, ইনটু দা ডেডে উল্টোটা। আপনাকে মাঠের পর মাঠ দৌড়ে পার হতে হবে জোম্বিদের সামনে রেখেই। আর গেমে মূলত আপনার কাজ হবে হেঁটে আসা জোম্বিগুলোকে পাশ কাটানো।
টেম্পল রান বা সাবওয়ে সার্ফারের সঙ্গে আরও একটি বড় পার্থক্য হচ্ছে, এই গেমে আপনি পাবেন ফার্স্ট পারসন ভিউ। এফপিএস গেমের ভক্তরা এই গেম খেলতে বসলে উঠতে পারবেন না বললেই চলে।
রানার টাইপ গেমে এই প্রথম ফার্স্ট পার্সন ক্যামেরার ব্যবহার করে দেখালো পিকপক। গেমটি খেলার পর আমার প্রথম অভিমত ছিল, আগে এই চিন্তাটা আর কেউ কেন করেনি। ফার্স্ট পার্সন ক্যামেরার জোরে গেমটির ভিতর নিমগ্ন হয়ে যাওয়া অনেক সহজ। বড় ডিভাইসে খেললে আপনার নিজেরই মনে হতে পারে জোম্বিদের থেকে দৌড়ে পালাচ্ছেন। আর গ্রাফিক্সও মানানসই, খুবই জ্যান্ত একটি ভৌতিক আমেজ সৃষ্টির জন্যে যথেষ্ট।
দ্বিতীয় যে জিনিসটি চোখে পরার মত – আরও ভাল ভাবে বললে কানে শোনার মত – তা হলো গেমটির সাউন্ড ইফেক্ট। টেম্পল রান ও অন্যান্য রানারের ভিতর গদবাধা বাজনা ব্যাবহার করা হলেও ইন্টু দা ডেডে কোনও বাজনাই নেই বলার মত। শুধু আপনার দৌড়ের ও নিঃশ্বাসের শব্দ আর জোম্বিদের ভয় ধরানো গোঙ্গানোর ধ্বনি। সবমিলিয়ে আপনাকে পুরোপুরিই বাস্তব অভিজ্ঞতা দিতে প্রস্তুত গেমটির সাউন্ড ইফেক্ট। কন্ট্রোল খুবই সাধারণ, আপনি ডিভাইস ডানে বামে কাত করে ডানে বা বামে যেতে পারবেন (অথবা স্ক্রিনের ডান বা বামে টাচ করে), আর মাঝে টাচ করে গুলি করে জোম্বি মারতে পারবেন। এটিই এই গেমের বিশেষ বৈশিষ্ট্য, রানার গেমের মাঝেও শুটারের মত অ্যাকশন।
দৌড়ের মাঝে ডানে বামে বক্স পাবেন, তাতে বন্দুক থাকবে। আপনি যত বেশি দৌড়োতে পারবেন তত বেশি পয়েন্ট পাবেন, যা দিয়ে নতুন বন্দুক কিনতে পারবেন অথবা পার্ক যেমন ১৫০০ মিটার আগে থেকে দৌড় শুরু বা প্রথম থেকেই বন্দুক থাকবে – এসব আপগ্রেড কিনতে পারবেন।
বাকি সব কিছু অনান্য রানারের মতই, আপনি জোম্বির মুখে পড়া মাত্র শেষ দৌড়। যতদূর সম্ভব দৌড়োতে হবে। তবে জোম্বির মুখে পড়ার দৃশ্যটিও দেখার মত।
তো আর বসে কেন? এখনি ডাউনলোড করুন এই ফ্রি গেমটি। গুগল প্লে স্টোরে মাত্র ২৫-৩০ মেগাবাইটের এই গেমটি ডাউনলোড করতে পারেন।
গুগল প্লে স্টোর লিংকঃ ইনটু দ্য ডেড অথবা Into The Dead লিখে আপনার মোবাইলের প্লে স্টোর থেকে সার্চ করুন।
জোম্বি গেমের মধ্যে এতোদিন সবচেয়ে এগিয়ে ছিল ডেড ট্রিগার গেমটি। মাত্র কয়েকশো’ মেগাবাইটের এই গেমটি না খেললে বিশ্বাসই করা যায় না কত দারুণ একটি গেম এটি। আবার খেলতে বসলে বিশ্বাস করা যায় না এই গেমটি আসলেই ফ্রি-তে পাওয়া যায়। ডেড ট্রিগারের মতো এতো হাই রেজুলেশন না হলেও অল্প স্টোরেজে সময় কাটানোর জন্য ইনটু দ্য ডেড আসলেই দারুণ একটি রানার গেম হতে পারে। তাই এখনই গেমটি ডাউনলোড করে খেলা শুরু করে দিন, কেমন লাগলো মন্তব্যের ঘরে জানান এবং কে কত বেশি স্কোর করতে পারলেন তা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করে দিন।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন