এন্ড্রয়েড সম্পর্কে আমরা কম বেশি অনেক কিছু জানি। কিভাবে এন্ড্রয়েড কেমনে কি হল এই ইতিহাস অনেকটাই পরিচিত। তবে তার পরেও রয়ে গেছে কিছু গোপন এবং অবিশ্বাস্য সত্য যা কিনা সত্যি বলে মানতেই কেমন লাগে! এরকম কয়েকটা সত্যি আজ এই পোস্ট এ তুলে ধরতে যাচ্ছি। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
এন্ড্রয়েড একজন পুরুষ
হ্যাঁ! এন্ড্রয়েড একজন পুরুষ! তবে ভয় পাবার কিছু নেই কারন পুরুষ রোবট। মেক্সিমাম ডিকশনারি তে খুজে দেখেন পাবেন যে Android এর মানে হচ্ছে একটি রোবট যা কিনা মানুষের মত দেখতে। এখানে andr একটি প্রেফিক্স হিসেবে ব্যাবহার হয়েছে যা কিনা একটি পুংলিঙ্গ। সুতরাং এ থেকে আমরা বুঝতে পারি Android হচ্ছে একটি পুরুষ রোবট।
এন্ড্রয়েড ওএস স্মার্টফোন এর জন্যে করা হয় নি
২০১৩ তে এন্ড্রয়েড এর প্রতিষ্ঠাতা Andy Rubin টকিও তে বলেছিলেন,এখন আমরা যে এন্ড্রয়েড দেখছি তা কখনও স্মার্টফোন এর জন্যে করা হয় নি। বরং এটি ডিজাইন করা হয়েছিল স্মার্ট ক্যামেরা এর জন্যে। আইডিয়াটা অনেকটা এরকম ছিল যে স্মার্টক্যামেরা থেকে পিসি তে ছবি কিংবা ডাটা ট্র্যান্সফার হবে একটি ক্লাউড সার্ভার/সার্ভিস এর মাধ্যমে যার নাম কিনা “এন্ড্রয়েড ডাটাসেন্টার”। তবে দুর্ভাগ্যবশত সময় খারাপ যাচ্ছিল কারন ওইসব ক্যামেরা এর বাজার অনেকটা ফ্লপ ছিল যার কারনে Andy Rubin ভাবনায় পরে গেলো এ নিয়ে। পরে এন্ড্রয়েড টিম আইডিয়াটি এক্সটেন্ড করে স্মার্টফোন এর জন্যে কাজ করতে থাকে। তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে এন্ড্রয়েড ডিজাইনই করা হয়েছিল সবসময় এটাকে ফ্রি তেই দেয়ার জন্যে। Rubin বলেছেন “We wanted as many cellphones to use Android as possible,”।
প্রতিটি এন্ড্রয়েড ইউজার স্টিভ জবস কে থ্যাংকস দেয়া উচিত
নাহ! আমি মজা করতেছি না আবার কাউকে বোকা ও বানাচ্ছি না! ২০০৫-২০০৭ পর্যন্ত এন্ড্রয়েড এর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল মাক্রোসফট। বলা বাহুল্য যে তখনকার সময়ে মাইক্রোসফট ছিলো সবচেয়ে বড় এবং ধনী কোম্পানি। তবে তখনকার সময়টায় প্রতিটি ফোন ছিল ভিন্ন এবং তাদের অপারেটিং সিস্টেম টাও ছিল ভিন্ন রকম! যেমন- Motorola তে একরকম অপারেটিং,নকিয়ার আবার এক রকম আবার স্যামসাঙ এর অন্য রকম! তো এন্ড্রয়েড টিম ভাবতে বাধ্য হয়েছিল যে যদি একই রকম অপারেটিং এর ডিভাইস বাজারে আসে তা একমাত্র মাইক্রোসফট এর ই হবে! তবে মজার ব্যাপার হলো ২০০৭ এ স্টিভ জবস আইফোন এর সূচনা ঘটায়। আর তা দেখে এন্ড্রয়েড টিম আবার বুঝতে পারে যে আসলে কিছু পরিবর্তন আসছে এবং আসবে তাই আবার তারা আগের মত কাজে ব্যাক করে। তাই আমি মনে করি এন্ড্রয়েড ইউজার হিসেবে এবং আজকের এই এন্ড্রয়েড বিপ্লব এর পিছনে স্টিভ জবস এরও পরোক্ষ অবদান আছে।
২০০৭ এ এন্ড্রয়েডই ছিলো সবচেয়ে এক্সাইটিং অপারেটিং সিস্টেম
আজ সবাই ভাবে অ্যাপল স্মার্টফোন জগতের এই পরিবর্তন এনেছে। তবে এন্ড্রয়েড টিম কি করেছে ?? প্রথম আইফোন সম্পূর্ণ ভাবে iTunes এর উপর নির্ভরশীল ছিল। কোন ধরনের মালটিটাস্কিং করা যেত না তখনকার আইফোন দিয়ে এমনকি কপি পেস্ট ও না। তবে এন্ড্রয়েড টিম তখন Sooner নামক যে ফোন ডেভেলপ করেছিল তাতে মালটিটাস্কিং ছিল। মজার ব্যাপার আইফোন যেমন তখন iTunes এর উপর নির্ভরশিল ছিল তখনই এন্ড্রয়েড এর সেই ডিভাইস কোন রকম ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপ এ কানেক্ট করতে হত না!!!! সুতরাং কোন ধরনের সফটওয়্যার এর উপর ডিপেন্ড করতে হয় নি এন্ড্রয়েড ডিভাইস এর!!! এবার আসুন আরো বলি, তখনকার সেই এন্ড্রয়েড শুধু মোবাইল ডিভাইস এ সীমাবদ্ধ ছিলো না! একই ওএস ট্যাবলেট এ ও ইউজ করা যেত! আরো মজার ব্যাপার অ্যাপল এর আইফোন যখন iTunes দিয়ে অ্যাপ সিঙ্ক করতে হত তখনই এন্ড্রয়েড এর ডিভাইস ডিরেক্ট অনলাইন অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করা যেত! — এই ব্যাপার টা অ্যাপল ইউজার রা মনে রাখা উচিত!
Space এ এন্ড্রয়েড অপারেটিং ব্যাবহার করা হয়
২০১৩ তে NASA এন্ড্রয়েড অপারেটিং এর আল্ট্রা চিপ কিছু স্যাটেলাইট আবিষ্কার করে যার নামকরন করা হয়- “PhoneSats”. এই স্যাটেলাইট বানানো হয় দুইটি HTC Nexus One এবং একটি Samsung Nexus S ব্যাবহার করে। সবকিছু মিলিয়ে প্রতিটি স্যাটেলাইট বানাতে খরচ হয় মাত্র ৩৫০০ আমেরিকান ডলার যা কিনা স্পেইস জগতে নাম মাত্র একটি এমাউন্ট!
শুধু NASA ই না, এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন পাওয়ারড আরেকটি স্যাটেলাইট তৈরি করে STRaND-1 যা কিনা লঞ্চ করা হয়েছিল ইন্ডিয়া এর শ্রীহরিকতা অঞ্ছলের Satish Dhawan Space Centre এ । এটিই ছিল স্মার্টফোন পাওয়ারড প্রথম স্যাটেলাইট যা বানানো হয়েছিল – Google Nexus One এর সাহায্যে।
স্মার্টফোন এতদিন স্মার্ট ছিল আমাদের হাতে। তবে এন্ড্রয়েড এই স্মার্টনেস কে পৌঁছে দিয়েছে স্যাটেলাইট পর্যন্ত! এন্ড্রয়েড এর বিপ্লব আমাদের কে আরও এরকম অবিশ্বাস্য কিছু উপহার দিবে এই আশায় থাকি আমরা এন্ড্রয়েড গিকস
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন